বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্। আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে একাধিক বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার কথা উল্লেখ আছে। আর চাকরি থেকে তার বার্ষিক আয় হিসেবে দেখানো হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হিসাবে চাকরি থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, বরিশালে কোনো সম্পত্তি নেই সাদিকের। স্থাবর সব সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ঢাকায়। তার বাবা, ভাইও থাকেন রাজধানীতেই।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই নির্বাচনে প্রার্থিতা করতে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ ২৮ জুন তার হলফনামা জমা দেন।
হলফনামার একাংশে বলা হয়েছে, সাদিক তার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেছেন কালীবাড়ী রোড, বগুড়া আলেকান্দা, ডাকঘর-বরিশাল সদর-৮২০০, বরিশাল সদর। কিন্তু আয়কর সনদে দেখা যায়, তার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা ২৫/১ লেক সার্কাস, কলাবাগান, ঢাকা।
হলফনামায় দুই জায়গায় দুই রকম স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করেছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ্। ছবি: সংগৃহীত
হলফনামায় পেশা/ব্যবসার বিবরণী অনুযায়ী, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ কান্তা করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক। এটির অবস্থান কলাবাগানের ২৫/১ লেক সার্কাস। এই ঠিকানার বাসাতেই তার বাবা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ ও ভাই সেরনিয়াবাত সাঈদ উদ্দীন বসবাস করেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেন এই মেয়র পদপ্রার্থী।
সেরনিয়াবাত সাদিকের হলফনামা অনুযায়ী, বরিশালে তার কোনো সম্পত্তি নেই। তার স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের আবাসিক প্লট (অকৃষি জমি) ও গুলশানের নিকেতনে আবাসিক ফ্ল্যাট।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা, পোস্টাল/সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২ লাখ, একটি রিকন্ডিশন মাইক্রো এবং খাট, আলমিরা, সোফা, ডাইনিং ও টেবিল।
সাদিকের আয়কর সনদে (টিন) দেওয়া অফিস/বাসার ফোন নম্বরে কল করা হলে তা রিসিভ করে জাহাঙ্গীর বলে এক ব্যক্তি নিজেকে পরিচয় দেন। জাহাঙ্গীর দাবি করেন, তিনিও কান্তা করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের একজন মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের পোশাক কারখানা রয়েছে গাজীপুরে।
হলফনামায় তার পেশা/ব্যবসার বিবরণী অনুযায়ী, কান্তা করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক নিজেকে উল্লেখ করলেও আয়কর ঘেঁটে দেখা যায়, তার ব্যবসা শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) নেই।
সাদিকের হলফনামা শনাক্ত করেছে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি।
১১ লাখ টাকা আয়ের উৎস গোপন
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ ১৫ লাখ টাকা খরচ করবেন। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকা তিনি খরচ করবেন নিজের আয় থেকে। বাকি ১১ লাখের মধ্যে তার বাবা আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্ ৭ লাখ এবং ভাই সেরনিয়াবাত মঈন উদ্দীন দেবেন ৪ লাখ টাকা। কিন্তু তার বাবা ও ভাইয়ের আয়ের উৎস কী, তা গোপন করেছেন এই মেয়র পদপ্রার্থী।
সেরনিয়াবাত সাদিকের বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে বছরে ২ লাখ ১৬ হাজার, ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৪০০ এবং চাকরির বেতন থেকে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় তার।
সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলে অন্য এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, এই মেয়র পদপ্রার্থী ব্যস্ত আছেন এবং তার গণমাধ্যম শাখার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
সেরনিয়াবাত সাদিকের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা দুলাল জানান, এই মেয়র পদপ্রার্থী নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত। ১১ জুলাইয়ের আগে মেয়র পদপ্রার্থী কথা বলবেন না।
হলফনামার শেষে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ বলেন, ‘আমি শপথপূর্বক ঘোষণা করিতেছি যে, এই হলফনামায় প্রদত্ত যাবতীয় তথ্য এবং এর সঙ্গে দাখিল করা সব দলিল-দস্তাবেজ আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সম্পূর্ণ সত্য ও নির্ভুল।
সূত্র: প্রিয়.কম
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply